coinpayu

অতি জযবাতি তরুণ বই সম্পর্কে ধারনা ২০২৪

 

অতি জযবাতি তরুণ বই 

মানবগাড়ির একমাত্র চালিকাশক্তি মহাগ্রন্থ আল-কোরআন ও হাদিসে রাসূল সা.। মনবজাতির রাহনুমা রাসূলে আরাবী তিরোধানের পূর্বে উম্মতের মুক্তির সফল এই দুই কাণ্ডারি রেখে গেছেন। অনাগত ভবিষ্যতের সকল বিষয়ের সবরকম জটিলতার সুস্থ সমাধানকল্পে কিতাবুল্লাহ ও সুন্নাতে রাসূলুল্লাহ উম্মতের কাছে পেশ করেছেন। উম্মতের উলূল আমর তথা আলেম সমাজ সেই হতে কোরআন-হাদিসের দরসের কাজ যেমন করছেন, উদ্ভুত নবাগত সকল সমস্যার বিস্তারিত শরয়ী সমাধানও দিয়ে আসছেন। সমস্যা ও তার সমাধান সমূহের সমন্বিত অসংখ্য কিতাব রচনা করেছেন। কোরআন ও হাদিসকে সামনে রেখে যুগোপযোগী সমাধানের যে বিশাল জ্ঞানভাণ্ডার তাঁরা রেখে গেছেন, পরবর্তীকালে তা উম্মহের সার্বিকভাবে কল্যাণকর পরিগণিত হয়েছে। এবং কোরআন ও হাদিস বোঝা ও বোঝানোর ময়দানে উপকারী বরং গুরুত্বপূর্ণ অবিচ্ছেদ্য অংশ হিসেবে সংযোজিত হয়েছে। যার উপর ভিত্তি করে উম্মাহের ওলামায়ে কেরাম লেখেন, কোরআন-হাদিসের নুসূসের সাথে আসলাফ ও মুতাকাদ্দিমীনের ব্যাখ্যা, মত, অভিমত ও বক্তব্য না থাকলে শুধু কোরআন-হাদিস থেকে ইসলাম ও শরিয়াহ’র কোন বিধানের ব্যাখ্যা, আলোচনা ও প্রয়োগ কখনো জায়েয হবে না। বরং এক্ষেত্রে উলামায়ে মুতাকাদ্দিমীনকে অবশ্যই অনুসরণ করতে হবে। নচেৎ কোরআন-হাদিস উপকারী না হয়ে পথভ্রষ্টতার মূল বিষয় হয়ে দাঁড়াবে। বক্ষমান বইয়ে প্রতিটি দলিলের ক্ষেত্রে লেখক আসলাফের অনুসরণ করেছেন। আসলাফের কথাগুগুলোই শুধু নিয়ে এসেছেন।

বর্তমান যুগের কিছু নাজুক ও স্পর্শকাতর মাসআলাসমূহের শরয়ী সমাধান প্রয়োজন হয়ে পড়েছে অনেক আগেই। রাষ্ট্র, সমাজ পরিবার ও ব্যক্তি হতে আরম্ভ করে কুফর, ইরতিদাদ, ইলহাদ ও নিফাকের ভয়াল রূপ যেভাবে সকলের মাঝে প্রোথিত হয়ে যাচ্ছে, তাওহীদবাদী সহজ সরল মুসলিমদের মাঝে জানা-অজানায় কৌশলে-অপকৌশলে ‘বুতপুরুস্তি’র মত ভয়ানক পৌত্তলিকতার অনুপ্রবেশ ঘটছে, মুক্তমনা ও স্বাধীনতার শ্লোগানে পশ্চিমা সংস্কৃতির ময়লা গণতন্ত্র, প্রজাতন্ত্র, রাজতন্ত্র, সমাজতন্ত্র, সাম্যবাদী, জাতিয়তাবাদী ও ধর্মনিরপেক্ষতার আড়ালে ইসলামী মুলুকের ইসলামী ভাবমূর্তি ও শরীয়তের আহকাম ক্ষয়, অবক্ষয় ও অপসারিত হচ্ছে এবং ধর্মত্যাগের সয়লাবে মুসলিম যুবক-যুবতি আবাল-বৃদ্ধা-বণিতা খড়কুটোর মত ভেসে যাওয়া সহ অপসংস্কৃতি, নষ্টামি, ভণ্ডামি ও ষণ্ডামির যে আগ্রাসন হচ্ছে। ঠিক এমনই মুহূর্ত উম্মতের অতন্দ্র প্রহরী ওলামায়ে কেরামের জিম্মাদারি ছিল রাষ্ট্র ও সমাজের হাল-চাল বুঝে কোরআন হাদিসের আলোয় উদ্ভাসিত ওলামায়ে আসলাফের জীবনী, জীবনাদর্শ, লেখনী, প্রবন্ধ, প্রবাদ ও বই-পুস্তকের আলোকে দিশেহারা উম্মাহের পাশে দাঁড়ানো, দলিলের আলোকে বর্তমান অবস্থার অবস্থান নিশ্চিত করে গণমাধ্যম, প্রচারমাধ্যম ও মিডিয়া জগতে তার নাজুকতা, ভয়াবহতার বিবরণ দিয়ে শরীয়তের স্পষ্ট বিধান ও তার কার্যকারিতা দেখিয়ে দেওয়া ।

কিন্তু হয়নি। সময় ও সুযোগের অভাবে করণীয় সঠিক সময়ে উপস্থাপিত হয়নি। কোরআন ও হাদিসের পাশাপাশি পূর্ববর্তীদের বক্তব্য ঘেঁটে দেখার সুযোগ হয়নি। অথবা বাঁচা ও বাঁচানোর তাগিদে সঠিক সিন্ধান্ত শুনিয়া দেওয়া হয়নি। সবসময় গা বেঁচো চলার চেষ্টা করা হয়েছে নবপ্রজন্মের একটি বৃহদাকৃতির অংশকে গা বেঁচে চলার সবক দেওয়া হয়েছে। দলিল চাওয়া হলে দলিল দেওয়া হয়নি। দলিলের ব্যাখ্যা-বিশ্লেশনের মাঝে কসুর করে অনেককিছু লুকানো হয়েছে।

আলহামদুলিল্লাহ, মাওলানা সাহেব তেমনই সন্ধিক্ষণে উম্মতের প্রয়োজন ও চাহিদাকে সামনে রেখে উক্ত শূণ্যস্থান পূরণ করে রচনা করেছেন অতি জযবাতি তরুণ ।

নামকরণের সাথে বইয়ের আলোচনা-ভঙ্গির যথেষ্ট মিল খুঁজে পাবেন, পাঠক। মুহতারাম আহলে ইলম এবং অতি জযবাতি তরুণ দুই শিরোনামে একই পক্ষের দুই শ্রেণীর দাবিদাওয়া, দলিল ও খন্ডন প্রক্রিয়ায় আলোচনা করেছেন লেখক।


আপনি যে কারণে অতি জযবাতি তরুণ পড়বেন…..

উম্মাহের বর্তমান ব্যাপক বিপর্যয়ের কথা জানতে পড়ুন। মানবরচিত আইন, আইনপ্রণয়নকারী, আইনরক্ষক ও এই আইনের বিচারক শরীয়তের আলোকে কুফরি, কাফের, যিন্দিক ও মুরতাদা জানতে পড়ুন। ধর্মনিরপেক্ষতা ও গণতন্ত্র ইসলামের সম্পূর্ণ সাংঘর্ষিক ভিন্ন ভিন্ন দু’টি কুফরী মতবাদ, এনিয়ে যাবতীয় মূলক-অমূলক সন্দেহের সহজ-সাবলীল সমাধান, নুসূসের সঠিক ব্যাখ্যা ও ওলামায়ে আসলাফের অবস্থান, ভূমকা এবং বক্তব্য জানতে পড়ুন ।


বর্তমান সমাজ-ব্যবস্থা ও রীতিনীতি উদ্ভাবকদের সূদুর প্রসারী উদ্দেশ্যের আলোকমুখ হিসেবে জনশ্রুত ‘ইসলামি গনতন্ত্রের’ অসারতা অযৌক্তিকতা জানতে পড়ুন ।

পশ্চিমা গনতন্ত্রের মাধ্যমে খেলাফাহ প্রতিষ্ঠার চেষ্টা-সাধনা-শ্রম অমূলক অনর্থক, ইসমাল কখনো মানবরচিত আইনের মাধ্যমে আসেনি আসবেও না বরং যে গণতন্ত্রের ধুমধামে খেলাফত ব্যবস্থায় ফাটল ও গুনে ধরেছে সে গণতন্ত্র ইসলাম ও মুসলমানের বন্ধু হওয়ার দাবি করা বোকামি, গোঁড়ামি ও মূর্খতা জানতে পড়ুন । ওলামায়ে কেরামের অনেকগুলো উদ্ধৃতি এই শিরোনামের অধীনে উল্লেখ করা হয়েছে, যারা আজীবন নিজেদের মেধা ও মগজ ব্যয় করেছিলেন এই গণতন্ত্রের পেছনেই, জীবনের ক্রান্তিকালে এসে দীর্ঘ জীবনের অভিজ্ঞতা জাতির সামনে দিয়ে গেছেন।


গণতন্ত্র-ব্যবস্থায় ভোটাভোটি বৈধ হওয়ার কোন সুরত নেই। গোড়ার সমস্যার কথা আড়াল করে অপেক্ষাকৃত কম খারাপকে বেচে নিয়ে ভোটিং প্রক্রিয়ায় অংশগ্রহণ করা ও করানোর বৈধতার ফাতওয়া দিয়ে জিম্মাদারি মুক্ত হওয়ার কোন পথ খোলা নেই। ভোট অবিশ্যি বর্জন করতে হবে। ভোট প্রদানের আড়ালে গণতন্ত্র ও ধর্মনিরপেক্ষতার মত আল্লাহর শাশ্বত বিধানের সাংঘর্ষিক মতবাদের প্রণয়ন, পাশ করণ এবং বাস্তবায়নের মৌন সমর্থন করার কোন সুযোগ নেই। অধিকন্তু এতোকিছুর পরও নিজকে ঈমানদার দাবী করতে স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করার কোন অধিকার নেই। এদেরকে শরীয়তের অকাট্য ও অমোঘ বিধান শুনিয়া দেওয়া থেকে কমজোরি দুর্বলতা জাহের করার কোন সুযোগ নেই। শরীয়তের আলোকে কাফের মুুরতদা মুলহিদ সাব্যস্ত হলে কৃত্রিম প্রক্রিয়ায় বাঁচিয়ে নেওয়ার অনুমতি ইসলামে নেই। যার স্পষ্ট আলোচনা করেছেন মুহতারাম লেখক।

আমরা জিম্মাদারি এড়িয়ে চলছি। যার পেছনে রয়েছে তারচে’ বড় কোন জিম্মাদারি। যার স্বরণও আমাদের গা শিউরে দেয়। অনেক খাটুনির চিত্র চোখের সামনে তুলে দেয়। যা মনে পড়লে ফ্যাকাশে হয়ে আসে আমাদের বদনদীপ্তি। ভোগ-বিলাসে মত্ত নির্জিব নিষ্প্রাণ অসার দেহখানায় বিদ্যুতের শক খেলে যায়। তবুও কি জিম্মাদারি ছুটে যাবে!

উম্মতের সার্বিক কল্যান ও সার্বভৌমত্বের নিশ্চিত ঠিকানা জিহাদ ফী-সাবিলিল্লাহ। সশস্ত্র সংগ্রাম কেতাল উম্মাহের মান-মর্যাদা ও প্রভাব-প্রতিপত্তি স্থায়ী ও সুস্থায়ী করার মাধ্যম। এই পথ দলিত মথিত করে অন্য কোন পথে বিজয় নেই নেই এবং নেই। নববী যুগে শান্তি এবং স্থিতিশীলতা এই সশস্ত্র সংগ্রাম; তরতাজা টগবগে যুককের উষ্ণ খুনেরই ফলাফল। সেই সশস্ত্র সংগ্রামের সাক্ষী হয়ে আছে ইতিহাসের অহুদ বদর খন্দক প্রমুখ।


সবশেষে, বইটির সর্বাধিক মাকবুল বিষয় হলো প্রতিটি দাবির অধীনে মাযহাবচতুষ্টয়ের সুবিজ্ঞ মো’তাবার ওলামায়ে আসলাফের অনেলগুলো উদ্ধৃতি সংযোজন। প্রতিটি উদ্ধৃতিতে দাবির হুবহু বক্তব্য প্রমাণ । উদ্ধৃতির আলোকে উদ্দিষ্ট দাবি পাঠক-সমীপে সংশয় ও অস্পষ্টতা বিহীন উঠে আসা।

আকাবিরীনে কেরামের ফাতোয়ার আলোকে বইয়ের কলেবর বৃদ্ধির কারণে বইটি অতিরিক্ত আবেদনময়ী ও গ্রহণযোগ্য বিবেচিত হয়েছে।

বইটি সম্পর্কে যতই বলি, খুুব কমই বলা হয়। বরঞ্চ আমার জানার চেনার আরো অনেক উর্ধ্বে বইটি। ভয় হয়, বলার অপরিপক্বতা ও ভাষার দৈন্যতার কারণে বইয়ের আবেদন পাঠক-টেবিলে খাটো হয়ে যায় না যেন!!


তদুপরি আপনি যদি ইসলামিক মাইন্ডের হয়ে থাকেন , পাঠপ্রেমিক এবং বইয়ের কীট হয়ে থাকেন পাঠ্যবইয়ের কাতারে এই বইটিও অন্তর্ভুক্ত করে যথাসময়ে

পড়ে দেখতে পারেন। ইনশাআল্লাহ, অনেক লাভবান হবেন।


পরিশেষে বইয়ের লেখক, সহযোগী, বন্ধু-বান্ধব এবং হিতাকাঙ্খীদের দীর্ঘায়ু কামনা করছি।

লেখকের অন্তরের নেক তামান্নাগুলো আল্লাহ তায়ালা আপন শান অনুযায়ী পুরা করে দেন এবং একদল তরুণ জানবাজ মর্দে মুজাহিদ তৈরি করে দেন। আমাকেও সেই কাফেলায় শরীক করে দেন। (যারা আমীন বলবে তাদেরকেও) আমীন, ইয়া রাব্বাল আলামীন।

পূর্ববর্তী পোষ্ট পরবর্তী পোষ্ট
coinpayu
coinpayu
coinpayu
coinpayu